শ্রীভক্তিসিদ্ধান্তবাণী

(ভগবান শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর)

হরিভজন-পরায়ণ ভক্ত গুরুর নিত্যদাস, শ্রীকৃষ্ণের নিত্যদাস । ভক্ত নিত্যকাল গুরুর আনুগত্যে শ্রীকৃষ্ণ সেবা করিয়া থাকেন । যেখানে গুরু ও বৈষ্ণবের আনুগত্য বাদ দিয়া হরিভজনের প্রয়াস—তাহা হরিভজন নহে—মায়ার ভজন । কোনও ব্যক্তি যদি গুরুর আনুগত্য ব্যতীত নিজ মতানুযায়ী সদাচার, তীর্থভ্রমণ, ভগদ্ভক্তির চতুঃষষ্টি অঙ্গ যাজন, ত্যাগ, তপস্যাচরণ, নামসঙ্কীর্ত্তন, তপ, ধ্যান—প্রভৃতি যাবতীয় ভক্ত্যঙ্গানুশীলনও করিতে প্রবৃত্ত হন, তবেও তিনি একটুকুও হরিভজন করিতেছেন না, পরন্তু নিজেন্দ্রিয় প্রীতিবাঞ্ছারূপ কাম চরিতার্থ করিতেছেন মাত্র ।

'নিজেন্দ্রিয় প্রীতি' হরিভজনের কপটসজ্জায় প্রকাশিত হইয়া উপভোগের ছলনায় অনেক সময় লোকদিগকে বঞ্চনা করিয়া থাকে । প্রতিষ্ঠাশা কনক, কামিনী সংগ্রহেচ্ছায় হরিভজনের কপট অভিনয় 'হরিভজন' নহে, কেবল কৈতবযুক্ত আত্মবঞ্চনা ও পরবঞ্চনা মাত্র ।

হরিভজনের মূলই গুরু ও বৈষ্ণবানুগত্য । গুরুর আনুগত্য ব্যতীত হরিভজনের ছলনা "ঘোড়া ডিঙ্গাইয়া ঘাস খাওয়ার" ন্যায় কুচেষ্টা । বদ্ধাবস্থায় ত' গুরুর আনুগত্ত্য ব্যতীত হরিভজনে প্রবেশ লাভই করা যাইতে পারে না—সিদ্ধাবস্থাতে যে সিদ্ধদেহে হরিভজন-প্রণালী তাহাতেও নিত্য গুরুদেবের আনুগত্য বর্ত্তমান । শ্রীহরির নিত্য আশ্রয়-বিগ্রহ শ্রীগুরুদেব ও তদনুগজনের আনুগত্য না থাকিলে অহংগ্রহোপাসনারূপ অপরাধমাত্র সার হয় ।

 


 

ফিরে গ্রন্থাগারে

"HUMILITY, TOLERANCE, GIVING HONOUR TO OTHERS | HUMILITY, TOLERANCE, GIVING HONOUR TO OTHERS"