| |||||||
|
|||||||
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মূল শিক্ষা
আম্নায়ঃ প্রাহ তত্ত্বং হরিমিহ পরমং সর্ব্বশক্তিং রসব্ধিং (শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর)
স্বয়ং ভগবান্ শ্রীমদ্ গৌরচন্দ্র এই দশটি তত্ত্ব জীবগণকে উপদেশ করিতেছেন ।
শুদ্ধভক্তির ক্রমপন্থা (শ্রীল রূপ গোস্বামী প্রভুর শ্রীভক্তিরসামৃতসিন্ধু হইতে উদ্ধৃত)
(১) শ্রদ্ধা—সাধুসঙ্গে শাস্ত্র-শ্রবণদ্বারা শাস্ত্রের অর্থে বিশ্বাস ।
চতুঃষষ্টি ভক্ত্যঙ্গ (শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের অমৃতপ্রবাহভাষ্য হইতে উদ্ধৃত) (১) গুরুপাদাশ্রয়, (২) মন্ত্রদীক্ষা, (৩) গুরুসেবা, (৪) সদ্ধর্ম্ম শিক্ষা ও জিজ্ঞাসা, (৫) সাধুদিগের পথানুগমন, (৬) কৃষ্ণপ্রীতির জন্য নিজের ভোগত্যাগ, (৭) কৃষ্ণতীর্থে বাস, (৮) যাহামাত্র পাইলে জীবন নির্ব্বাহ হয়, সেইরূপ পরিমাণে প্রতিগ্রহ, (৯) একদশীর উপবাস, (১০) ধাত্রি-অশ্বত্থ-গো-বিপ্র-বৈষ্ণবের সম্মান, (১১) সেবাপরাধ ও নামাপরাধকে দূরে বর্জ্জন, (১২) অবৈষ্ণব-সঙ্গত্যাগ, (১৩) বহুশিষ্য না করা, (১৪) বহুগ্রন্থের কলা অর্থাৎ আংশিক অভ্যাস এবং ব্যাখ্যাবাদত্যাগ, (১৫) হানিতে এবং লাভে সমবুদ্ধি, (১৬) শোকাদির বশ না হওয়া, (১৭) অন্য দেবতা বা শাস্ত্রের অবজ্ঞা না করা, (১৮) বিষ্ণু ও বৈষ্ণবের নিন্দা না শুনা, (১৯) গ্রাম্যবার্ত্তা অর্থাৎ স্ত্রী-পুরুষের ইন্দ্রিয়তর্পণমূলক গৃহবার্ত্তা না শুনা, (২০) প্রাণিমাত্রের মনের উদ্বেগ না জন্মান, ব্যবহারে অকার্পণ্য, মহারম্ভের অনুদ্যম, (২১) শ্রবণ, (২২) কীর্ত্তন, (২৩) স্মরণ, (২৪) পূজন, (২৫) বন্দন, (২৬) পরিচর্য্যা, (২৭) দাস্য, (২৮) সখ্য, (২৯) আত্মনিবেদন, (৩০) শ্রীবিগ্রহের অগ্রে নৃত্য, (৩১) গীত, (৩২) বিজ্ঞপ্তি, (৩৩) দণ্ডবৎ প্রণাম, (৩৪) অভ্যুত্থান অর্থাৎ ভগবান্ বা ভক্ত আসিতেছেন দেখিয়া দাঁড়ান, (৩৫) অনুব্রজ্যা অর্থাৎ ভক্ত বা ভগবান্ যাত্রা করিলে পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাওয়া, (৩৬) তীর্থে এবং ভগবদ্গৃহে গমন, (৩৭) পরিক্রমা, (৩৮) স্তবপাঠ, (৩৯) জপ, (৪০) সংকীর্ত্তন, (৪১) ভগবৎ-প্রসাদী ধূপ ও মাল্যের গন্ধগ্রহণ, (৪২) মহাপ্রসাদ সেবন, (৪৩) আরত্রিক-মহোৎসব-দর্শন, (৪৪) শ্রীমূর্ত্তি-দর্শন, (৪৫) নিজ প্রিয়বস্তু ভগবান্েক অর্পণ, (৪৬) ধ্যান, (৪৭) তুলসী-সেবন, (৪৮) বৈষ্ণব-সেবন, (৪৯) মথুরায় বাস, (৫০) ভাগবতের আস্বাদ, (৫১) কৃষ্ণের জন্য অখিল চেষ্টা, (৫২) তাঁহার কৃপা-প্রতীক্ষা, (৫৩) ভক্তগণের সহিত জন্মদিনাদির মহোৎসব, (৫৪) সর্ব্বপ্রকারে শরণাপত্তি, (৫৫) কার্ত্তিকাদি ব্রত, দেহে (৫৬) বৈষ্ণবচিহ্ণধারণ, দেহে (৫৭) হরিনামাক্ষরধারণ, দেহে (৫৮) নির্ম্মাল্যধারণ, (৫৯) চরণামৃত পান, (৬০) সাধুসঙ্গ, (৬১) নামকীর্ত্তন, (৬২) ভাগবৎ-শ্রবণ, (৬৩) মথুরাবাস, (৬৪) শ্রদ্ধাপূর্ব্বক শ্রীমূর্ত্তি-সেবা ।
চতুর্থ প্রকার অনর্ (শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের শ্রীভজনরহস্য হইতে উদ্ধৃত)
(১) তত্ত্ব বিভ্রম—(ক) স্বতত্ত্বে ভ্রম, (খ) পরত্ত্বে ভ্রম, (গ)
সাধ্য-সাধন-তত্ত্বে ভ্রম, (ঘ) বিরোধী বিষয়ে ভ্রম ।
পঞ্চরোগ
(১) অবিদ্যা—অজ্ঞান অর্থাৎ জীব নিজের চিৎস্বরূপ ভুলিয়াছে ।
বদ্ধজীবের চারপ্রকার দোষ (শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত হইতে উদ্ধৃত)
(১) ভ্রম—যে বস্তু যাহা নহে, তৎসম্বন্ধে মিথ্যজ্ঞান; যথা—রজ্জুতে সর্পভ্রম,
শুক্তিতে রজত-ভ্রম ।
দশবিধ নামাপরাধ
(১) সাধুনিন্দা,
চতুর্থ প্রকার সাধুনিন্দা যিনি বৈষ্ণবের (১) জাতি দোষ, (২) কাদাচিৎক অর্থাৎ প্রমাদাগত দোষ, (৩) নষ্টপ্রায় দোষ, (৪) শরণাগতির পূর্ব্বাচরিত দোষ ধরিয়া বৈষ্ণবকে নিন্দা করেন, তিনি বৈষ্ণব নিন্দুক ।
৩২ প্রকার সেবাপরাধ (১) যানাদি-যোগে অথবা পাদুকা পরিধান করিয়া ভগবদ্-গৃহে গমন, (২) ভগবজ্জন্মাদি যাত্রার উৎসব না করা, (৩) শ্রীবিগ্রহের সম্মুখে প্রণাম না করা, (৪) উচ্ছিষ্টগাত্রে অথবা অশুচি অবস্থায় শ্রীবিগ্রহের বন্দনা, (৫) একহস্তে প্রণাম, (৬) শ্রীবিগ্রহের সম্মুখে পায়চারি করা, (৭) শ্রীবিগ্রহের সম্মুখে পাদ-প্রসারণ, (৮) পর্যঙ্ক-বন্ধন অর্থাৎ শ্রীবিগ্রহের অগ্রে হস্তদ্বয়দ্বারা জানুদ্বয় বন্ধনপূর্ব্বক উপবেশন, (৯–১৭) শ্রীবিগ্রহের সম্মুখে শয়ন, ভোজন, মিথ্যাভাষণ, উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা , পরস্পর ইত কথার আলোচনা, রোদন, কলহ, কাহারও প্রতি নিগ্রহ, কাহারও প্রতি অনুগ্রহ, (১৮) সাধারণের প্রতি নিষ্ঠুর-বাক্য-ব্যবহার, (১৯) লোমকম্বলে আবৃত হইয়া সেবাকার্যাদি করা, (২০-২৩) শ্রীমূর্তির সম্মুখে পরনিন্দা, পরস্তুতি, অশ্লীল-বাক্য ব্যবহার, অপানবায়ু পরিত্যাগ, (২৪) বিত্তশাঠ্য অর্থাৎ সামর্থ্য থাকিতে অল্প উপচারে অথবা অল্প ব্যয়ে পূজা ও উৎসবাদি করা, (২৫) অনিবেদিত বস্তু গ্রহণ, (২৬) যে সময়ে যে ফল ও শস্যাদি উৎপন্ন হয়, সেই সময়ে তাহা অর্পণ না করা, (২৭) সংগৃহীত দ্রব্যের অগ্রভাগ অন্যকে প্রদান করিয়া অবশিষ্টাংশ ব্যঞ্জনে প্রদান, (২৮) শ্রীমূর্তিকে পশ্চাতে রাখিয়া উপবেশন, (২৯) শ্রীমূর্তির সম্মুখে অন্যকে অভিবাদন, (৩০) শ্রীগুরুদেবের অগ্রে স্তবাদি না করিয়া মৌনভাবে অবস্থান, (৩১) শ্রীগুরুদেবের সম্মুখে আত্ম-প্রশংসা, (৩২) দেবতা-নিন্দা ।
দশবিধ ধামাপরাধ (১) শ্রীধাম-প্রদর্শক শ্রীগুরু ও সাধুকে অবজ্ঞা, (২) শ্রীধামকে অনিত্য-বোধ, (৩) শ্রীধামবাসী ও ভ্রমণকারীর প্রতি হিংসা ও জাতিবুদ্ধি, (৪) শ্রীধামে বসিয়া বিষয়কার্যাদির অনুষ্ঠান, (৫) শ্রীধাম-সেবাচ্ছলে শ্রীধাম-বিগ্রহের ব্যবসায় ও অর্থোপার্জন, (৬) জড়-বুদ্ধিতে ধামের সহিত জড়দেশের অথবা অন্য দেবতীর্থের সমজ্ঞান ও পরিমাণচেষ্টা, (৭) শ্রীধামবাস-বলে পাপাচরণ, (৮) শ্রীনবদ্বীপ ও শ্রীবৃন্দাবনে ভেদজ্ঞান, (৯) ধামমাহাত্ম্যমূলক শাস্ত্র-নিন্দা এবং (১০) শ্রীধাম-মাহাত্ম্যে অবিশ্বাসমূলে অর্থবাদ ও কল্পনা-জ্ঞান ।
কলির পাঁচ স্থান (শ্রীমদ্ভাগবতম্ হইতে উদ্ধৃত)
(১) দ্যূত; যথা—তাস, দাবা, পাশা, ঘোড়দৌড়, জলের খেলা, জুয়া, লটারি, সতরঞ্চ, দশপঁচিশ, বাঘবন্দী, প্রভৃতি । তার মধ্যে মিথ্যা থাকে । এই করিলে সত্যের নাশ হয় ।
ভক্তির প্রতিকূল (শ্রীল ভক্তিবিনোদ প্রভুর শ্রীউপদেশামৃতের পীযূষবর্ষিণী বৃত্তি হইতে উদ্ধৃত)
(১) বাক্যবেগ—ভূতোদ্বেগকারী বচনপ্রয়োগ ।
ভক্তির কণ্টক (শ্রীল ভক্তিবিনোদ প্রভুর শ্রীউপদেশামৃতের পীযূষবর্ষিণী বৃত্তি হইতে উদ্ধৃত)
(১) অত্যাহার—অধিক আহরণ বা সংগ্রহ বা সঞ্চয়চেষ্টা ।
ভক্তির অনুকূল (শ্রীল ভক্তিবিনোদ প্রভুর শ্রীউপদেশামৃতের পীযূষবর্ষিণী বৃত্তি হইতে উদ্ধৃত)
(১) উৎসাহ—ভক্তির অনুষ্ঠানে ঔৎসুক্য, আদরের সহিত অনুশীলন ।
জয় ধ্বনি
জয় সপরিকর শ্রীশ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ-গান্ধর্ব্বা-গোবিন্দসুন্দর জীউ কী জয় !
শ্রীহরিবাসর তিথি বিধি
প্রশ্ন: কখন শ্রীহরিবাসর তিথি পালনীয় ?
তচ্চ কৃষ্ণপ্রীণনত্বাদ্বিধিপ্রাপ্তত্বতস্তথা ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস: ১২।৪) “(১) শ্রীকৃষ্ণপ্রীতিহেতু, (২) শাস্ত্রীর বিধি থাকায়, (৩) ব্রতদিনে (অন্ন) ভোজন নিষেধ থাকায় এবং (৪) ব্রত অকরণে দোষভাগী হইতে হয়” । তিনি তাঁহার নিজ-কৃত ভাষ্য ব্যাখ্যা করেছিলেন যে যদিও অকরণে দোষভাগীতা মুখ্য নিত্যতা, তবুও শুদ্ধভক্তগণের পক্ষে শ্রীকৃষ্ণপ্রীতিহেতুতাই পরম মুখ্য, এই কারণে তিনি তাহাই প্রথম লিখেছিলেন এবং আরো বলেছেন—
তত্র ব্রতস্য নিত্যত্বাদবশ্যং তৎ সমাচরেৎ । (শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।৩) “এই শ্রীহরিবাসর-ব্রতের নিত্যতাহেতু সর্ব্বপাপহারী, সর্ব্বফলপ্রদ ও শ্রীকৃষ্ণতোষণ-ব্রত অবশ্য সম্পূর্ণভাবে আচরণ করিবেন” ।
একাদশীব্রতং নাম সর্ব্বকামফলপ্রদম্ ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।৮ সংখ্যায় বৃহন্নারদীয়পূরণ-বাক্য)
“সকল কামফলপ্রদ শ্রীএকাদশীব্রত বিষ্ণু-তোষণের জন্যই বিপ্রগণের সর্ব্বদা আচরণ করা কর্ত্তব্য” । আনুষঙ্গিক ফলস্বরূপ চতুর্ব্বর্গ ফল (ধর্ম্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ) এসে গেলেও ঐকান্তিক শুদ্ধভক্ত ঐ সকল তুচ্ছ ফল অনুরক্ত না হয়ে পঞ্চমপুরুষার্থ প্রেমফল লাভে আগ্রহী হয়ে থাকেন ।
যানি কানি চ পাপানি ব্রহ্মহত্যাসমানি চ ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।১৯ সংখ্যায় বৃহন্নারদীয়পূরণ-বাক্য) “ব্রহ্মহত্যা ও তৎসম এবং যতকিছু পাপ শ্রীহরিবাসরদিনে অন্নকে আশ্রয় করে থাকে । সুতরাং একাদশীতে অন্ন ভোজনকারী ব্যক্তি ঐসকল পাপ যুক্ত হয় ।” সোঽশ্নাতি পার্থিবং পাপং যোঽশ্নোতি মধুভির্দ্দিনে । (শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।২০ সংখ্যায় বৃহন্নারদীয়পূরণ-বাক্য) “যে ব্যক্তি শ্রীহরিবাসরে অন্ন ভোজন করে, সেই ব্যক্তি পৃথিবীর যতকিছু পাপ ভোগ করে ।”
মাতৃহা পিতৃহা চৈব ভ্রাতৃহা গুরুহা তথা ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।২১ সংখ্যায় বৃহন্নারদীয়পূরণ-বাক্য)
“যে ব্যক্তি একাদশীতে অন্ন ভোজন করে, সেই ব্যক্তি মাতৃহত্যা, পিতৃহত্যা, ভ্রাতৃহত্যা ও গুরুহত্যার পাপ সকল প্রাপ্ত হয় এবং বিষ্ণুলোকে কখনও গমন করতে পরে না, বা বৈষ্ণবধর্ম্মচ্যুত হওয়ায় বৈষ্ণব সঙ্গ পায় না ।”
উপাবৃত্তস্য পাপেভ্যো যস্তু বাসো গুণৈঃ সহ ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১৩।৩৫ সংখ্যায় বৃহন্নারদীয়পূরণ-বাক্য) “সকল পাপ হতে নিবৃত্ত হয়ে সদ্গুণ সমূহের সহিত যে মনুষ্যের বাস হয়, তাহাকে উপবাস বলে, এই উপবাসে সমস্ত ভোগ বর্জ্জিত জানতে হবে” ।
বৈষ্ণবো যদি ভুঞ্জীত একাদশ্যাং প্রমাদতঃ ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।৩২ সংখ্যায় ব্রহ্মবৈবর্ত্তপূরণ-বাক্য)
“বৈষ্ণব যদি ভ্রম বশতঃ একাদশীতে অন্ন ভোজন করে, তবে তাহার বিষ্ণুপূজা বিফল হয় এবং তাহার ভয়ঙ্কর নরক প্রাপ্তি হয়” ।
শ্রীহরিবাসর-দিনে কৃষ্ণনামরসপানে
তৃপ্ত হয় বৈষ্ণব সুজন ।
শ্রীহরি-বাসরে অধিক কীর্ত্তনদ্বয় করণীয়—সকালে শ্রীহরিবাসরে হরিকীর্ত্তন-বিধান ও রাত্রিতে শুদ্ধ ভকত-চরণ-রেনু ভজন-অনুকূল । শ্রীহরিবাসরে উপবাস এবং পারণ করা কর্ত্তব্য, যেমন (প্রেমবিবর্ত্ত: ১৮।১১)—
প্রসাদ ভোজন নিত্য শুদ্ধ বৈষ্ণবের কৃত্য
অপ্রসাদ না করে ভক্ষণ ।
পঞ্জিকায় উল্লিখিত পারণ সময়ের মধ্যে শ্রীএকাদশী ব্রত ভঙ্গের জন্য মহাপ্রসাদাদি গ্রহণ অবশ্য কর্ত্তব্য । শ্রীহরিবাসরে যেন সারাদিন সেবা-সাধনে থাকা যায় তার জন্য শাস্ত্র অনুমোদিত অনুকল্প গ্রহণীয়, যেমন (প্রেমবিবর্ত্ত: ১৮।১১)—
অনুকল্পস্থানমাত্র নিরন্ন প্রসাদপাত্র
বৈষ্ণবকে জানিহ নিশ্চিত ।
শ্রীএকাদশীতে অনুকল্প আয়োজন এই রূপ—
অষ্টৈতান্যব্রতঘ্নানি আপো মূলং ফলং পয়ঃ ।
(শ্রীহরিভক্তিবিলাস ১২।১০০ সংখ্যায় মহাভারত-বাক্য) “জল, ফল, মূল, দুগ্ধ, ঘৃত ও ব্রাহ্মণ প্রার্থনীয়, গুরুবাক্য ও ঔষধ—এই আটটি ব্রতনাশক হয় না” । শ্রীমঠে ভক্তগণ এইভাবে অনুকল্প গ্রহণ করেন—
সকালে—পূর্ণ উপবাস । শুধু ঘি, বাদাম তেল, সূর্য্যমুখী তেল ব্যবহার করা যাবে । শস্যযুক্ত কোন দ্রব্য যেমন গুড়া মশলা, ময়দাযুক্ত সাগু ইত্যাদি গ্রহণ করা যাবে না । সেইজন্য ঘরের তৈরী ঘি, ছানা অথবা নারকেল মিষ্টি দ্রব্য গ্রহণ করা যাবে । এই সকল পঞ্চ রবিশস্য অবশ্যই বর্জ্জনীয়—(১) ধান্য অথবা ধান্যজাতীয় দ্রব্য—চাল, চিড়া, মুড়ি প্রভৃতি, (২) গোধূম—আটা, ময়দা প্রভৃতি, (৩) যব—যবের ছাতু, বার্লি প্রভৃতি, (৪) ডাল—মুগ, মসূর, ছোলা, মটর, অড়হর, কলাই, খেসারি প্রভৃতি, (৫) সরিষার তৈল ও তিল তৈল ।
☜ ফিরে গ্রন্থাগারে |
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মূল শিক্ষা :
• শুদ্ধভক্তির ক্রমপন্থা |
||||||