আমাদের শ্রীগুরুপরম্পরা :
শ্রীশ্রীল ভক্তিনির্ম্মল আচার্য্য মহারাজ শ্রীশ্রীল ভক্তিসুন্দর গোবিন্দ দেবগোস্বামী মহারাজ শ্রীশ্রীল ভক্তিরক্ষক শ্রীধর দেবগোস্বামী মহারাজ ভগবান্ শ্রীশ্রীল ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর
              প্রভুপাদ
“শ্রীচৈতন্য-সারস্বত মঠে সূর্যাস্ত কখনই হয় না” :
আমাদের মঠের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
 
আমাদের সম্পর্কে শ্রীউপদেশ শ্রীগ্রন্থাগার শ্রীগৌড়ীয় পঞ্জিকা ছবি ENGLISH
 

একমাত্র দয়াল সাগর

ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রীল ভক্তি নির্ম্মল আচার্য্য মহারাজের হরি-কথামৃত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

 

আমাদের উৎসবের আজকে শেষ দিন । সমস্ত ভক্তগণ প্রায় চলে গিয়েছেন কিন্তু যারা রয়েছেন তারা কিছু কথা শ্রবণ করতে সুযোগ পাচ্ছেন । এই দিনটার অপেক্ষায় আমাদের আগামী বছর পর্য্যন্ত বসে থাকতে হবে, ভাবতে হবে, “এই দিনটা আবার কবে আসবে ?”

আজকে উৎসবের সমাপ্তি প্রায় । আমরা কয়েকদিন ধরে শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভুর কথা আলোচনা করেছি, তাঁর মহিমা কীর্ত্তন করেছি কিন্তু শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করা সহজ কাজ নয় তবু আমরা চেষ্টা করছি ।

শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভুর কথা যদি আমরা শ্রবণ কীর্ত্তন করি এবং তাঁর সেবা করতে পারি তাহলে আমাদের পরমকল্যাণ বস্তু লাভ হবে । সেই কল্যাণ বস্তু লাভের জন্য অনেক লোক রাধাকৃষ্ণের চরণে সেবা করতে যান কিন্তু সেই সেবা পাওয়ার আগে নিত্যানন্দ প্রভুর সেবা করতে হবে । নিতাইচাঁদের চরণ সেবা না করিলে, নিত্যানন্দের কৃপা না পেলে আমরা কিছুই করতে পারব না ।

নিত্যানন্দ প্রভু আমাদের সমস্ত বাধা-বিঘ্ন সরিয়ে দিতে পারেন । তিনি আমাদের বিষয়বাসনা ছাড়িয়ে দিতে পারেন । একমাত্র নিত্যানন্দ প্রভু আমাদের বিষয় আসক্তি ছাড়িয়ে দিতে পারেন । সেইজন্য যে দিনটাকে তিনি অবলম্বন করে আবির্ভূত হয়েছেন, সেই দিনটা আমরা প্রতি বৎসর উৎসব করি । এই দিনটাও এখানে (শ্রীচৈতন্য সরস্বাত মঠ শ্রীএকচক্রায়) আমাদের গুরু মহারাজের (ওঁ বিষ্ণুপাদ জগৎগুরু শ্রীল ভক্তিসুন্দর গোবিন্দ দেবগোস্বামী মহারাজের) কৃপায় শ্রীশ্রীগৌর-নিত্যানন্দ বিগ্রহ-রূপে প্রকটিত হয়েছেন । এত সুন্দর সেবা, এত সুন্দর বিগ্রহ কোথাও দেখা যায় না ।

শ্রীমন্ নিত্যানন্দ প্রভু নিজে কৃপা করে এখানে অবির্ভূত হয়েছেন । নিত্যানন্দ প্রভুর কৃপা যাঁরা অবলম্বন করেন তাঁর কৃপা মনে রাখতে পারেন, তাঁরা নিতাইচাঁদের সেবা করতে পারেন । নিত্যানন্দ প্রভুর কৃপাটা হচ্ছে এরখম—শিবানন্দ সেনকে তিনি লাথি মেরে কৃপা করেছেন, রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে তিনি মস্তকে পা তুলে দিয়ে বললেন, “তোর বন্ধন মুক্ত হয়ে গেল ! চলে যাও মহাপ্রভুর কাছে ।” এই ভাবে সেই নিতাইচাঁদের কৃপা যদি লাভ করতে পারি তাহলে আমাদের আর কিছু অমঙ্গল হবে না, কোন অসুবিধা হবে না এবং আমাদের সহজেই রাধাকৃষ্ণের চরণ প্রাপ্তি হবে ।

মাতল হরিজন কীর্ত্তন রঙ্গে ।
পূজল রাগপথ গৌরব ভঙ্গে ॥

নিত্যানন্দ প্রভুর কৃপার কথা কহন না যায় । তিনি অত্যান্ত পতিত অধম জগাই মাধাইকে উদ্ধার করেছেন এমনকি মাধাইকে তিনি মহাপ্রভুর চরণে এনে দিলেন । মহাপ্রভু যাঁকে অস্বীকার করেন নিত্যানন্দ প্রভু তাঁকে কৃপা করেন সুতরং মহাপ্রভুর চেয়ে তাঁর শক্তিটা অনেক বেশী ।

সেই নিত্যানন্দ প্রভুর কথা সারাপৃথিবীর লোক জানেন, ‘দয়াল নিতাই’ বলেন । তিনি একমাত্র দয়ার সাগর । তিনি উত্তম অধম কিছু বিচার করেন না — তাঁর চরণে আগে যে পড়ে যাবেন, তাঁকে তিনি নিস্তার করে দেবেন । সেই নিত্যানন্দ প্রভুর মহিমাগুণ কীর্ত্তন আমাদের প্রত্যেক দিন অনুশীলন করতে হবে ।

নিত্যানন্দ স্বরূপ পরম অধিকারী ।
অল্প ভাগ্যে তাহানে জানিতে নাহি পারি ॥

অলৌকিক যেবা কিছু দেখ তান ।
তাহাতে আদর করিলে পাই ত্রাণ ॥
পতিতের ত্রাণ লাগি তাঁর অবতার ।
তাঁহা হৈতে সর্ব জীব পাইবে উদ্ধার ॥
তাঁহার আচার বিধি নিষেধের পার ।
তাঁহারে বুঝিতে শক্তি আছয়ে কাহার ॥

কিন্তু তিনি যে আচরণ করেছেন সে আচরণ অনুকরণ করলে হবে না ।

 


 

← গ্রন্থাগারে

অন্য রচনা:
শ্রীনৃসিংহদেবের কথা
দণ্ড মহৎসব
মায়ার চিন্তা বা কৃষ্ণের চিন্তা ?
আমাদের একমাত্র উপায়
ভক্তির অভাব
গৃহে আবদ্ধ
মায়ের পেট থেকে মায়ার পেটের মধ্যে
জীবকে সত্য দয়া কি ?
ভোগী নই ত্যাগীও নই
শ্রবণ-কীর্ত্তনে মতি
ভগবানের কৃপা ও আপনার চেষ্টা
শান্তির গুপ্ত কথা
পবিত্র জীবন
বামনদেবের কথা
ভক্ত ও নাপিত
ভগবানের চরণে পথ
পূজনীয় বিসর্জন
শিবজী মহারাজ : পরম বৈষ্ণব
শ্রীহরিনাম দীক্ষা : গুরুপাদপদ্মের দান
আমি তো সব ব্যবস্থা করি নাকি ?
চকচক করলেই সোনা হয় না
আমার শোচন
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥