আমাদের শ্রীগুরুপরম্পরা :
শ্রীশ্রীল ভক্তিনির্ম্মল আচার্য্য মহারাজ শ্রীশ্রীল ভক্তিসুন্দর গোবিন্দ দেবগোস্বামী মহারাজ শ্রীশ্রীল ভক্তিরক্ষক শ্রীধর দেবগোস্বামী মহারাজ ভগবান্ শ্রীশ্রীল ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুর
              প্রভুপাদ
“শ্রীচৈতন্য-সারস্বত মঠে সূর্যাস্ত কখনই হয় না” :
আমাদের মঠের পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
 
আমাদের সম্পর্কে শ্রীউপদেশ শ্রীগ্রন্থাগার শ্রীগৌড়ীয় পঞ্জিকা ছবি ENGLISH
 

ভক্তির অভাব

ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রীল ভক্তি নির্ম্মল আচার্য্য মহারাজের হরি-কথামৃত
১৭ জানুয়ারী ২০১৬

 

ভগবানের কথা, ভগবানের নাম, রূপ, গুণ, লীলা, পরিকর, বৈশিষ্ট্য সম্পুর্ণ ভগবান থেকে অভিন্ন ।

সবসময় তো আমরা ভাগবত-কথা, সাধুসঙ্গ করতে সুযোগ পাই না । কিন্তু শাস্ত্রে বলেছেন “বৈষ্ণব-সঙ্গেতে মন আনন্দিত অনুক্ষণ” এবং “‘সাধুসঙ্গ’, ‘সাধুসঙ্গ’—সর্ব্বশাস্ত্রে কয়, লবমাত্র সাধুসঙ্গে সর্ব্বসিদ্ধি হয়” (শ্রীচৈতন্য-চরিতামৃত) । সাধুসঙ্গ (হরি-ভক্ত-সঙ্গ) করতে হয় ।

জগতে অনেক কিছু পাওয়া যায়, কিন্তু জগতের লোকের ভক্তির খুব অভাব । সেই ভক্তি টাকা দিয়ে কিনতে পারি না, পয়সা দিয়ে কিনতে পাওয়া যায় না, হৃদয় থেকে এগুলো আসতে হবে—হৃদয় দিয়ে ভক্তি পাওয়া হয় । কিন্তু বাইরের জগতের লোক সেটা বুঝতে পারে না : “যারা কৃষ্ণ-বহির্মুখ-জীব, তাদের নাহি কৃষ্ণের স্মৃতি-জ্ঞান ।” তারা ভগবানকে পূজা করে ভগবানের পূজার বিনিময়ে কিছু চায়—“আমি এই করলাম (দেবদেবীর পূজা, ভগবানের পূজা করলাম), তার বিনিময়ে কিছু চাই ।” সেইটা হচ্ছে ‘কর্ম্মমিশ্রভক্তি’ ।

ভক্তির মধ্যে ভাগ আছে : কর্ম্মমিশ্রভক্তি, জ্ঞানমিশ্রভক্তি, জ্ঞানশূন্য-ভক্তি । কর্ম্মমিশ্রভক্তি মানে কেউ ভাবচ্ছেন, “ভগবান, আমি তোমাকে প্রণাম করলাম, তার বিনিময়ে আমার শরীরটা ভালো রাখ”, “ভগবান, তোমাকে আমি একটা ফুল-টুল দিলাম, তার বিনিময়ে আমার ঘরটা ভালো রাখ, সংসার ভালো রাখ ।” এই সব হচ্ছে কর্ম্মমিশ্রভক্তি—ভগবানের জন্য কিছু করার বিনিময়ে কিছু চাওয়া । জ্ঞানমিশ্রভক্তি তা ওইরকম (কিছু করার বিনিময়ে জ্ঞান পেতে আশা করা) । আর জ্ঞানশূন্যভক্তি হচ্ছে যে, “ভগবান, আমরা তোমার সেবা করার জন্য এই মনুষ্য জন্ম, এই মনুষ্য দেহ লাভ করেছি আর তোমার সেবায় সব কিছু করব ।”

এই মনুষ্য দেহ লাভের স্বার্থকতা কোথায় ? আমরা গুরু-বৈষ্ণব-ভগবানের সেবা করতে পারি, আর তা না হলে এ মনুষ্য জন্ম পেয়ে আপনারা হারিয়ে ফেলবেন—এ দেহ চলে যাওযার পর আপনারা একটা অন্য দেহ পাবেন এবং বারবার মায়া-বদ্ধ হয়ে থাকবেন ।

যখন আপনারা আশ্রমে না থাকেন, তখন গৃহস্থ আশ্রম থেকে গৃহস্থ আশ্রমের ক্রিয়া-কার্য করেও গুরু-বৈষ্ণব-ভগবানের সেবা করা যায় কিন্তু সেই গৃহস্থ আশ্রমে থেকে যদি সবসময় গৃহের চিন্তা করেন, তার ফলটা তখন খুবি খারাপ ।

 


 

← গ্রন্থাগারে

অন্য রচনা:
শ্রীনৃসিংহদেবের কথা
দণ্ড মহৎসব
মায়ার চিন্তা বা কৃষ্ণের চিন্তা ?
আমাদের একমাত্র উপায়
ভক্তির অভাব
গৃহে আবদ্ধ
মায়ের পেট থেকে মায়ার পেটের মধ্যে
জীবকে সত্য দয়া কি ?
ভোগী নই ত্যাগীও নই
শ্রবণ-কীর্ত্তনে মতি
ভগবানের কৃপা ও আপনার চেষ্টা
শান্তির গুপ্ত কথা
পবিত্র জীবন
বামনদেবের কথা
ভক্ত ও নাপিত
ভগবানের চরণে পথ
পূজনীয় বিসর্জন
শিবজী মহারাজ : পরম বৈষ্ণব
শ্রীহরিনাম দীক্ষা : গুরুপাদপদ্মের দান
আমি তো সব ব্যবস্থা করি নাকি ?
চকচক করলেই সোনা হয় না
আমার শোচন
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥