| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা
নবমোঽধ্যায়ঃ রাজগুহ্যযোগ
শ্রীভগবান্ উবাচ (শ্রীভগবান্ কহিলেন) ইদং (এই) গুহ্যতমং (অত্যন্ত গোপনীয়) জ্ঞানং (আমার কীর্ত্তনাদি শুদ্ধ ভক্তিরূপ জ্ঞান) অনসূয়বে (অমৎসর) তে (তোমাকে) বিজ্ঞানসহিতং তু (আমার সাক্ষাৎ অনুভব পর্য্যন্তই) প্রবক্ষ্যামি (বলিতেছি) যৎ (যাহা) জ্ঞাত্বা (জানিয়া) অশুভাৎ (সংসার বা ভক্তি প্রতিবন্ধক সমস্ত অমঙ্গল হইতে) ত্বং (তুমি) মোক্ষ্যসে (মুক্ত হইবে) ॥১॥ শ্রীভগবান্ বলিলেন—এই অতি গূঢ় আমার কীর্ত্তনাদি শুদ্ধভক্তিরূপ জ্ঞান অসূয়াশূন্য তোমাকে বিজ্ঞান অর্থাৎ আমার সাক্ষাৎ অনুভবের সহিত বলিতেছি, যাহা অবগত হইলে সংসার বা ভক্তির প্রতিবন্ধক সকল অমঙ্গল হইতে মুক্তি লাভ করিবে ॥১॥
ইদম্ (এই জ্ঞান) রাজবিদ্যা (বিদ্যা সমূহের রাজা) রাজগুহ্যং (গোপনীয় জ্ঞান সমূহের রাজা) উত্তমম্ (অতিশয়) পবিত্রম্ (পবিত্র), প্রত্যক্ষাবগমং (প্রত্যক্ষ অনুভূতির বিষয়) ধর্ম্ম্যং (সমস্ত ধর্ম্মসাধক) কর্ত্তুম্ সুসুখং (অতি সুখসাধ্য) অব্যয়ম্ [চ] (এবং অবিনশ্বর বলিয়া) [বিদ্ধি] (জানিবে) ॥২॥ এই জ্ঞান বিদ্যাসমূহের রাজা, গোপনীয় জ্ঞান সমূহেরও রাজা, অতিশয় পবিত্র, অতীন্দ্রিয় হইলেও (সেবন্মুখ-ইন্দ্রিয়ের) প্রত্যক্ষ অনুভূতির বিষয়, সমস্ত ধর্ম্মসাধক, অতি সুখসাধ্য ও নির্গুণ বলিয়া জানিবে ॥২॥
[হে] পরন্তপ ! (হে শত্রুতাপন অর্জ্জুন !) অস্য ধর্ম্মস্য (মদ্ভক্তিরূপ এই ধর্ম্মের প্রতি) অশ্রদ্দধানাঃ (শ্রদ্ধাশূন্য) পুরুষাঃ (পুরুষগণ) মাং (আমাকে) অপ্রাপ্য (লাভ করিতে না পারিয়া) মৃত্যুসংসারবর্ত্মনি (মৃত্যুময় সংসার পথে) নিবর্ত্তন্তে (সর্ব্বদা পরিভ্রমণ করে) ॥৩॥ হে পরন্তপ ! আমার ভজনরূপ এই ধর্ম্মের প্রতি শ্রদ্ধারহিত মানবগণ আমাকে না পাইয়া মৃত্যুময় এই সংসারে পরিভ্রমণ করে ॥৩॥
অব্যক্তমূর্ত্তিনা (অতীন্দ্রিয় মূর্ত্তিস্বরূপ) ময়া (আমার দ্বারা) ইদং (এই) সর্ব্বং জগৎ (সমুদয় জগৎ) ততম্ (ব্যাপ্ত), সর্ব্বভূতানি (সমস্তভূতই) মৎস্থানি (পূর্ণচৈতন্যস্বরূপ আমাতে অবস্থিত) । অহং চ (কিন্তু আমি) তেষু (সেই সমুদয়ে) ন অবস্থিতঃ (অবস্থিত নহি) ॥৪॥ আমি অপ্রকাশিত ভাবে এই সমস্ত জগতে পরিব্যাপ্ত ও সমুদয় পদার্থ আমাতেই অবস্থিত রহিয়াছে । কিন্তু আমি সেই সমুদয়ে অবস্থিত নহি ॥৪॥
মে (আমার) ঐশ্বরম্ যোগম্ (অসাধারণ অঘটন-ঘটনা-চাতুর্য্য) পশ্য (দর্শন কর) । ভূতানি ন চ মৎস্থানি (ভূতসকল আমাতে অবস্থিত নহে) মম (আমার) আত্মা (আত্মস্বরূপ) ভূতভৃৎ (ভূতগণের ধারক) ভূতভাবনঃ চ (এবং ভূতগণের পালক), [কিন্তু] ন ভূতস্থঃ (ভূতমধ্যে অবস্থিত নহে) ॥৫॥ অথবা তাহারাও আমাতে অবস্থিত নহে—আমার এই প্রকার অচিন্ত্য-ভেদাভেদরূপ ঐশ্বরিকভাব দর্শন কর । অর্থাৎ আমার আত্মস্বরূপই ভূতগণের ধারক ও ভূতগণের পালক হইয়াও তাহাতে আবদ্ধ নহে ॥৫॥
বায়ুঃ (বায়ু) সর্ব্বত্রগঃ (সর্ব্বত্র গমনশীল) মহান্ [অপি] (মহৎ পরিমাণ হইলেও) যথা (যেরূপ) নিত্যং (সর্ব্বদা) আকাশস্থিতঃ (আকাশে অবস্থিত), তথা (সেরূপ) সর্ব্বাণি ভূতানি (সমস্ত ভূতগণ) মৎস্থানি (আমাতে অবস্থিত) ইতি (ইহা) উপধারয় (নিশ্চয় কর) ॥৬॥ বায়ু সর্ব্বত্র গমনশীল ও মহান্ হইলেও যেরূপ সর্ব্বদা আকাশে অবস্থিত থাকিয়াও তাহাতে সংশ্লিষ্ট হয় না এবং আকাশও বায়ুর সহিত সংশ্লিষ্ট হয় না, সেইভাবে ভূতগণ আমাতে অবস্থিত ইহা জানিও ॥৬॥
[হে] কৌন্তয় ! (হে কুন্তীপুত্ত্র !) কল্পক্ষয়ে (প্রলয়কালে) সর্ব্বাণি (সমস্ত) ভূতানি (ভূতগণ) মামিকাম্ (আমার) প্রকৃতিং (ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতিতে) যান্তি (লয়প্রাপ্ত হয়) পুনঃ (পুনরায়) কল্পাদৌ (কল্পারম্ভে) তানি (সেই ভূত সকলকে) অহম্ (আমি) বিসৃজামি (বিশেষভাবে সৃষ্টি করি) ॥৭॥ হে কুন্তীপুত্ত্র ! প্রলয় সময়ে এই সমুদয় ভূতগণ আমার মায়া নামক প্রকৃতিতে লীন হয় । পুনরায় কল্পারম্ভে সেইসব ভূতগণকে আমি বিশেষভাবে সৃষ্টি করিয়া থাকি ॥৭॥
[অহং] (আমি) স্বাম্প্রকৃতিং (নিজ ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতিকে) অবষ্টভ্য (আশ্রয় করিয়া) প্রকৃতেঃ বশাৎ (প্রাচীন কর্ম্মনিমিত্ত স্বভাববশে) অবশং (কর্ম্মাদি পরবশ) ইমং (এই) কৃৎস্নম্ (সমগ্র) ভূতগ্রামম্ (ভূত সমষ্টিকে) পুনঃ পুনঃ (বার বার) বিসৃজামি (সৃষ্টি করি) ॥৮॥ আমি স্বীয় মায়া নামক প্রকৃতিকে আশ্রয় করিয়া প্রাচীনকল্পের কর্ম্মনিমিত্ত স্বভাববশতঃ কর্ম্মাদি পরবশ এই সমস্ত ভূতগণকে বারস্বার সৃষ্টি করিয়া থাকি ॥৮॥
[হে] ধনঞ্জয় ! (হে ধনঞ্জয় !) তেষু কর্ম্মসু (সেই সকল সৃষ্ট্যাদি কার্য্যে) অসক্তং (আসক্তিরহিত) উদাসীনবৎ আসীনং চ (এবং উদাসীনের ন্যায় অবস্থিত) মাং (আমাকে) তানি কর্ম্মাণি (সেই সকল বিশ্ব সৃষ্ট্যাদি কর্ম্ম) ন নিবধ্নন্তি (আবদ্ধ করিতে পারে না) ॥৯॥ হে ধনঞ্জয় ! সেই সমস্ত সৃষ্ট্যাদি কর্ম্মে আসক্তিশূন্য এবং উদাসীনের মত অবস্থিত আমাকে সেই বিশ্বসৃষ্টাদি কার্য্যসকল বন্ধন করিতে পারে না ॥৯॥
[হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীনন্দন !) ময়া অধ্যক্ষেণ (আমাকে অধ্যক্ষ অর্থাৎ নিমিত্ত স্বরূপে লাভ করিয়া) প্রকৃতিঃ (আমার মায়াশক্তি) সচরাচরম্ (স্থাবরজঙ্গমাত্মক) [জগৎ] (ব্রহ্মাণ্ড) সূয়তে (প্রসব করে), অনেন হেতুনা (এই কারণে) জগৎ (জগৎ) বিপরিবর্ত্ততে (পুনঃ পুনঃ উৎপন্ন হয়) ॥১০॥ হে কৌন্তেয় ! আমার অধ্যক্ষতায় আমার মায়াশক্তিই স্থাবর-জঙ্গমাত্মক এই বিশ্ব প্রসব করে, এবং এই হেতু অর্থাৎ সৃষ্ট বস্তু মাত্রই বিনাশশীল বলিয়া জগৎ পুনঃ পুনঃ উৎপন্ন হইয়া থাকে ॥১০॥
মূঢ়াঃ (অবিবেকিমানবগণ) মম (আমার) মানুষীং তনুম্ (মনুষ্যাকৃতি শ্রীবিগ্রহ) আশ্রিতম্ (আশ্রিত) ভাবম্ (তত্ত্বই) পরং (সর্ব্বোৎকৃষ্ট স্বরূপ) [ইতি] (ইহা) অজানন্তঃ (জানিতে না পারিয়া) ভূতমহেশ্বরম্ (সর্ব্বভূতের মহান্ ঈশ্বর) মাং (আমাকে) অবজানন্তি (মনুষ্যবুদ্ধিতে অবজ্ঞা করে) ॥১১॥ অবিবেকী মনুষ্যগণ আমার যে মানুষাকৃতি শ্রীবিগ্রহই সর্ব্বোৎকৃষ্ট স্বরূপ ইহা না বুঝিয়া সর্ব্বভূতের মহেশ্বররূপ আমাকে প্রাকৃত মনুষ্যবুদ্ধিতে অবজ্ঞা করিয়া থাকে ॥১১॥
[তে] (তাহারা) মোঘাশাঃ (নিষ্ফল কামনাবিশিষ্ট), মোঘকর্ম্মাণঃ (নিষ্ফল কর্ম্মা) মোঘজ্ঞানাঃ (বৃথা জ্ঞানী) বিচেতসঃ [চ] (ও বিক্ষিপ্তচিত্ত) [ভবন্তি] (হইয়া থাকে) । [এবং] মোহিনীং (মোহজনক) রাক্ষসীম্ (তামস) আসুরীং চ (ও রাজস) প্রকৃতিং এব (স্বভাবকেই) শ্রিতাঃ (আশ্রয় করিয়া থাকে)॥১২॥ সেই মূঢ়লোকগণ বিফল আশা, বৃথা কর্ম্মী, নিষ্ফল জ্ঞানী ও বিবেকবিহীন হইয়া মোহজনক তামসী বা রাজসী স্বভাবকেই প্রাপ্ত হইয়া থাকে ॥১২॥
[হে] পার্থ ! (হে পার্থ !) তু (কিন্তু) মহাত্মানঃ (ভগবদ্ভক্তিনিরত মহাত্মাগণ) দৈবীং প্রকৃতিং (দেব স্বভাবকে) আশ্রিতাঃ (প্রাপ্ত হইয়া) অনন্যমনসঃ (অনন্যচিত্তে) মাং (মনুষ্যাকৃতি আমাকেই) ভূতাদিম্ (ভূতগণের কারণ) অব্যয়ম্ [চ] (ও অবিনশ্বর) জ্ঞাত্বা (জানিয়া) ভজন্তি (ভজন করেন) ॥১৩॥ হে পার্থ ! কিন্তু মহাত্মাগণ দৈবী-প্রকৃতিকে আশ্রয়পূর্ব্বক আমাতে একাগ্রচিত্ত হইয়া মনুষ্যাকৃতি আমাকেই সর্ব্বভূতের কারণ ও সনাতন-স্বরূপ জানিয়া সেবা করিয়া থাকেন ॥১৩॥
[তে] (তাঁহারা) সততং (দেশ, কাল ও পাত্রশুদ্ধি নিরপেক্ষ হইয়া সর্ব্বদা) মাং কীর্ত্তয়ন্তঃ (আমার নাম রূপাদি কীর্ত্তনকারী), যতন্তঃ (আমার স্বরূপগুণাদি নির্ণয়ে যত্নশীল) দৃঢ়ব্রতাঃ চ (এবং অপতিত ভাবে একাদশ্যাদি ও নামগ্রহণাদি নিয়ম পালনকারী হইয়া) নমস্যন্তঃ চ (আমাকে নমস্কারাদি সর্ব্ববিধ ভক্তিপূর্ব্বক) নিত্যযুক্তাঃ (ভবিষ্যতে আমার নিত্য সংযোগ আকাঙ্ক্ষায়) ভক্ত্যা (ভক্তিযোগ দ্বারা) মাম্ (আমাকে) উপাসতে (ভজনা করেন) ॥১৪॥ তাঁহারা কাল, দেশ ও পাত্রের শুদ্ধি অশুদ্ধি বিচারশূন্য হইয়া সর্ব্বদা আমার নাম, রূপ, গুণ ও লীলাদি কীর্ত্তনরত, আমার স্বরূপ গুণাদি নির্ণয়ে যত্নশীল এবং অপতিত ভাবে একাদশ্যাদি ও নাম গ্রহণাদি নিয়ম পালনকারী হইয়া আমার প্রতি নমস্কারাদি সর্ব্ববিধ ভক্তি আচরণ করতঃ ভবিষ্যতে আমার সহিত নিত্য সংযোগের আকাঙ্ক্ষায় ভক্তিযোগ দ্বারা আমাকে উপাসনা করেন ॥১৪॥
অপি চ (আর) জ্ঞানযজ্ঞেন (জ্ঞানরূপ যজ্ঞের দ্বারা) যজন্তঃ (যজনকারী) অন্যে (অপর অহংগ্রহোপাসকগণ) একত্বেন (অভেদ চিন্তন দ্বারা), [অন্যে] (অন্য প্রতীকোপাসকগণ) পৃথক্ত্বেন (বিষ্ণুই আদিত্যাদিরূপে অবস্থিত এইরূপ ভেদচিন্তা দ্বারা) [অন্যে চ] (এবং অন্য বিশ্বরূপোপাসকগণ) বহুধা (বহু প্রকারে) বিশ্বতোমুখম্ (বিশ্বরূপ) মাম্ (আমাকে) উপাসতে (উপাসনা করেন) ॥১৫॥ আর জ্ঞানমার্গীয় উপাসকগণ কেহ কেহ আমার সহিত নিজের অভেদত্ব, কেহ বা আমার সহিত দেবতান্তরের অভেদত্ব, কেহ বা আমার সহিত অমার বিশ্ববিভূতির অভেদ ভাবনাপূর্ব্বক নানাপ্রকারে আমারই উপাসনা করিয়া থাকেন ॥১৫॥
অহং (আমি) ক্রতুঃ (অগ্নিষ্টোমাদি যজ্ঞ) অহং (আমি) যজ্ঞঃ (বৈশ্বদেবাদি স্মৃত্যুক্ত পঞ্চযজ্ঞ) অহম্ (আমি) স্বধা (পিতৃলোক উদ্দেশে শ্রাদ্ধাদি) অহম্ (আমি) ঔষধম্ (ওষধিজাত অন্ন) অহম্ (আমি) মন্ত্রঃ (মন্ত্র), অহম্ (আমি) আজ্যম্ (ঘৃতাদি) অহং (আমি) অগ্নিঃ (অগ্নি) অহং এব (আমিই) হুতম্ (হোমক্রিয়া) ॥১৬॥ আমি অগ্নিষ্টোমাদি শ্রৌতযজ্ঞ, আমি বৈশ্বদেবাদি স্মৃত্যুক্ত পঞ্চযজ্ঞ, আমি পিতৃগণ-উদ্দেশে শ্রাদ্ধাদি, আমি ঔষধ, আমি মন্ত্র, আমি ঘৃতাদি, আমি অগ্নি এবং আমিই হোমক্রিয়া ॥১৬॥
অহম্ (আমি) অস্য (এই) জগতঃ (জগতের) পিতা (পিতা), মাতা (মাতা), ধাতা (কর্ম্মফলপ্রদাতা), পিতামহঃ (পিতামহ), বেদ্যং (জ্ঞেয় বস্তু), পবিত্রম্ (শুদ্ধি সম্পাদক) ওঙ্কারঃ (প্রণব), ঋক (ঋগ্বেদ), সাম (সামবেদ) যজুঃ এব চ (এবং যজুর্ব্বেদও আমিই) ॥১৭॥ আমি এই জগতের পিতা, মাতা, কর্ম্মফলবিধাতা, পিতামহ, জ্ঞেয় বস্তু, শুদ্ধি-সম্পাদক প্রণব, ঋগ্বেদ, সামবেদ ও যজুর্ব্বেদ—এই সবই আমি ॥১৭॥
[অহং] (আমি) গতিঃ (কর্ম্মফল) ভর্ত্তা (পতি) প্রভুঃ (নিয়ন্তা) সাক্ষী (শুভাশুভদ্রষ্টা) নিবাসঃ (আশ্রয়স্থান) শরণং (রক্ষক) সুহৃৎ (নিরুপাধিহিতকারী) প্রভবঃ (সৃষ্টি) প্রলয়ঃ (প্রলয়) স্থানং (ও স্থিতিক্রিয়া) নিধানং (আকর) অব্যয়ম্ বীজম্ (অবিনাশিকারণ) ॥১৮॥ এবং আমিই সকলের গতি, পতি, নিয়ন্তা, শুভাশুভ দ্রষ্টা, আশ্রয়স্থান, রক্ষক, নিরুপাধি-হিতকারী, সৃষ্টি, সংহার ও স্থিতিক্রিয়া, আকর বীজস্বরূপ অব্যয়-পুরুষ ॥১৮॥
[হে] অর্জ্জুন ! (হে অর্জ্জুন !) অহম্ (আমি) তপামি (উত্তাপ দান করি) অহং (আমি) বর্ষং (বারিবর্ষণ) উৎসৃজামি (করিয়া থাকি) নিগৃহ্ণামি চ (এবং কখনও তাহা আকর্ষণ করিয়া থাকি) অহম্ এব (আমিই) অমৃতং (মোক্ষ) মৃত্যুঃ চ (এবং মৃত্যু), সৎ (স্থূল) অসৎ চ (ও সূক্ষ্ম সমুদয় বস্তু) ॥১৯॥ হে অর্জ্জুন ! আমি সূর্য্যস্বরূপে গ্রীষ্মকালে উত্তাপ দান করি, বর্ষাকালে আমি বারিবর্ষণ করিয়া থাকি, আবার কখনও কখনও বর্ষণকে আকর্ষণ করিয়া থাকি । আমিই মোক্ষ এবং মৃত্যু, স্থূল ও সূক্ষ্ম সমুদয় বস্তু ॥১৯॥
ত্রৈবিদ্যাঃ (বেদত্রয়োক্ত কর্ম্মানুষ্ঠান পরায়ণ) সোমপাঃ (যজ্ঞশেষ সোমপানকারী) পূতপাপাঃ (নিষ্পাপ ব্যক্তিগণ) মাং (ইন্দ্রাদিরূপ আমাকে) যজ্ঞৈঃ (যজ্ঞ দ্বারা) ইষ্ট্বা (পূজা করিয়া) স্বর্গতিং (স্বর্গলোক) প্রার্থয়ন্তে (কামনা করেন) তে (তাঁহারা) পুণ্যম্ (পুণ্যফল-স্বরূপ) সুরেন্দ্রলোকম্ (ইন্দ্রলোক) আসাদ্য (প্রাপ্ত হইয়া) দিবি (স্বর্গে) দিব্যান্ (উত্তম) দেবভোগান্ (দেবোচিতসুখ) অশ্নন্তি (ভোগ করেন) ॥২০॥ বেদত্রয়োক্ত কর্ম্মানুষ্ঠানকারিগণ বেদবিহিত যজ্ঞসমূহ দ্বারা ইন্দ্রাদিরূপে আমাকেই পূজা করিয়া যজ্ঞশেষ সোমপান পূর্ব্বক নিষ্পাপ হইয়া স্বর্গলোক প্রার্থনা করেন ; তাঁহারা তখন পুণ্যফল স্বরূপ দেবলোক প্রাপ্ত হইয়া স্বর্গে দিব্যভোগসকল ভোগ করিয়া থাকেন ॥২০॥
তে (তাঁহারা) তং (সেই) বিশালং (বিপুল) স্বর্গলোকং (স্বর্গলোকের সুখ) ভুক্ত্বা (ভোগ করিয়া) পুণ্যে ক্ষীণে (পুণ্যক্ষয়ে) মর্ত্ত্যলোকং (মর্ত্ত্যলোকে) বিশন্তি (প্রবেশ করেন) ; এবং (এইরূপে) ত্রয়ীধর্ম্মম্ (বেদত্রয় বিহিত ধর্ম্ম) অনুপ্রপন্নাঃ (অনুষ্ঠানে তৎপর) কামকামাঃ (ভোগেচ্ছু মানবগণ) গতাগতং (সংসারে যাতাযাত) লভন্তে (লাভ করিয়া থাকেন) ॥২১॥ তাঁহারা সেই বিশাল স্বর্গলোকের সুখ ভোগ করিয়া পুণ্যক্ষয়প্রাপ্ত হইলে এই মর্ত্ত্যলোকে জন্মগ্রহণ করেন ; এইরূপে বেদবিহিত ধর্ম্মের অনুসরণকারী কামকামী ব্যক্তিগণ সংসারে পুনঃ পুনঃ যাতায়াত বা জন্ম-মরণ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন ॥২১॥
অনন্যাঃ (অন্য কামনা-রহিত) মাং চিন্তয়ন্তঃ (আমার চিন্তা-নিরত) যে জনাঃ (যে সকল ব্যাক্তিগণ) পর্য্যুপাসতে (সর্ব্বতোভাবে আমারই উপাসনা করেন), তেষাং (সেই) নিত্যাভিযুক্তানাং (নিত্য সংযোগকামিগণের) যোগক্ষেমং (যোগ অপ্রাপ্য ধনাদি লাভ, ক্ষেম সেইসব রক্ষা এই উভয় কার্য্যই) অহং (আমি) বহামি (বহন করিয়া থাকি) ॥২২॥ অনন্যভাবযুক্ত আমার চিন্তানিরত যে সকল ব্যক্তি সর্ব্বতোভাবে একমাত্র আমারই উপাসনা করেন, সেই সকল মদেকনিষ্ঠ ভক্তগণের প্রয়োজনীয় বস্তু সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ভার আমিই বহন করিয়া থাকি ॥২২॥
[হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীপুত্ত্র !) যে (যে সকল ব্যক্তি) অন্যদেবতাভক্তাঃ অপি (অন্য দেবতার ভক্ত হইয়াও) শ্রদ্ধয়া অন্বিতাঃ (শ্রদ্ধা সহকারে) যজন্তে (পূজা করেন), তে অপি (তাহারাও) অবিধিপূর্ব্বকম্ (মৎপ্রাপকবিধি ব্যতিরেকে) মাম্ এব (আমাকেই) যজন্তি (পূজা করেন) ॥২৩॥ হে কৌন্তেয় ! যে সকল ব্যক্তি শ্রদ্ধাযুক্ত হইয়া ভক্তি সহকারে অন্য দেবতার উপাসনা করেন, তাহারাও আমারই পূজা করিয়া থাকেন কিন্তু তাহা অবিধিপূর্ব্বক ॥২৩॥
হি (যেহেতু) অহং এব (আমিই) সর্ব্বযজ্ঞানাং (সমস্ত যজ্ঞের) ভোক্তা চ (ভোক্তা) প্রভুঃ চ (এবং ফলদাতা) তু (কিন্তু) তে (তাহারা) মাম্ (আমাকে) তত্ত্বেন (যথার্থরূপে) ন অভিজানন্তি (জানিতে পারে না), অতঃ (এইজন্য) [পুনঃ] (পুনরায়) চ্যবন্তি (জন্মগ্রহণ করে) ॥২৪॥ যেহেতু আমিই যজ্ঞ সমূহের ভোক্তা এবং ফলদাতা । কিন্তু তাহারা আমাকে উক্ত স্বরূপে জানিতে পারে না সুতরাং পুনরায় জন্মাদি লাভ করিয়া থাকে ॥২৪॥
দেবব্রতাঃ (দেবপূজকগণ) দেবান্ (দেবতাগণকে) যান্তি (প্রাপ্ত হন), পিতৃব্রতাঃ (পিতৃকার্য্যনিরতগণ) পিতৄন্ (পিতৃগণকে) যান্তি (প্রাপ্ত হন), ভূতেজ্যাঃ (ভূতপূজকগণ) ভূতানি (ভূতগণকে) যান্তি (প্রাপ্ত হন), মদ্যাজিনঃ (এবং আমার পূজকগণ) মাম্ অপি (আমাকেই) যান্তি (প্রাপ্ত হন) ॥২৫॥ অন্যদেব পূজকগণ সেই সেই দেবতাকে লাভ করেন, শ্রাদ্ধাদি ক্রিয়াপরায়ণগণ পিতৃলোক গমন করেন, ভূতপূজকগণ ভূতলোক প্রাপ্ত হন, এবং আমার পূজকগণ আমাকেই লাভ করেন ॥২৫॥
যঃ (যিনি) ভক্ত্যা (ভক্তির সহিত) মে (আমাকে) পত্রং (পত্র) পুষ্পং (পুষ্প) ফলং (ফল) তোয়ং (ও জল) প্রযচ্ছতি (প্রদান করেন), অহং (আমি) প্রযতাত্মনঃ (আমার ভক্তিপ্রভাবে বিশুদ্ধচিত্ত) [তস্য] (সেই ব্যক্তির) ভক্ত্যুপহৃতম্ (ভক্তিপূর্ব্বক প্রদত্ত) তৎ (সেই পত্রাদি) অশ্নামি (সমস্তই ভক্ষণ করি অর্থাৎ অতি প্রীতির সহিত যথাযোগ্যভাবে গ্রহণ করি) ॥২৬॥ যিনি ভক্তির সহিত আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল ও জল প্রদান করেন, আমি, আমার প্রতি ভক্তিপ্রভাবে বিশুদ্ধচিত্ত সেই ভক্তের ভক্তিপূর্ব্বক সমর্পিত সেই পত্রাদি সমস্তই ভক্ষণ করিয়া থাকি অর্থাৎ অত্যন্ত প্রীতিযুক্ত হইয়া যথাযোগ্য ভাবে গ্রহণ করি ॥২৬॥
[হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীনন্দন !) [ত্বং] (তুমি) যৎ (লৌকিক বা বৈদিক যে কর্ম্ম) করোষি (কর), যৎ (যাহা কিছু) অশ্নাসি (ভোজন কর), যৎ (যাহা) জুহোষি (হোম কর), যৎ (যাহা কিছু) দদাসি (দান কর), যৎ (যে) তপস্যসি (ব্রতাদি কর) ; তৎ (তাহা সমস্তই) মদর্পণম্ (আমাতে যে প্রকারে অর্পিত হয় সেইরূপ ভাবে) কুরুষ্ব (কর) ॥২৭॥ হে কৌন্তেয় ! তুমি লৌকিক না বৈদিক যে সকল কর্ম্ম কর, যাহা কিছু আহার কর, যাহা হোম কর, যাহা কিছু দান কর, যে ব্রতাদি কর ; সে সমুদয়ই আমাতে যেভাবে অর্পিত হয় সেরূপে কর ॥২৭॥
এবং (এইরূপে) [কর্ম্ম কুর্ব্বন্] (সমস্ত কর্ম্ম করিলে) শুভাশুভফলৈঃ (শুভ বা অশুভ ফলরূপ) কর্ম্মবন্ধনৈঃ (কর্ম্মবন্ধন সমূহ হইতে) মোক্ষ্যসে (মুক্ত হইবে) । সন্ন্যাসযোগযুক্তাত্মা (কর্ম্মফল ত্যাগরূপ যোগযুক্তমনা তুমি) বিমুক্তঃ [সন্] (মুক্তগণের মধ্যেও বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হইয়া) মাম্ উপৈষ্যসি (আমার নিকট গমন করিবে) ॥২৮॥ এইরূপে লৌকিক বা বৈদিক সমস্ত কর্ম্ম করিলেও তজ্জন্য শুভাশুভ ফলরূপ কর্ম্মবন্ধন সকল হইতে তুমি মুক্ত হইবে এবং মনে কর্ম্মফলের আসক্তি না থাকা হেতু তুমি মুক্তগণের মধ্যেও বিশিষ্টতা লাভ করিয়া আমার নিকট গমন করিবে ॥২৮॥
অহং (আমি) সর্ব্বভূতেষু (সমস্ত ভূতের প্রতি) সমঃ (তুল্য ভাবাপন্ন) [অতএব] মে (আমার) দ্বেষ্যঃ (শত্রু) ন অস্তি (নাই), প্রিয়ঃ [চ] ন [অস্তি] (এবং প্রিয়ও নাই) ; তু (কিন্তু) যে (যাঁহারা) মাং (আমাকে) ভক্ত্যা (ভক্তিপূর্ব্বক) ভজন্তি (ভজনা করেন), তে (তাঁহারা) ময়ি (আমাতে) [যথা আসক্তাঃ] (যেরূপ আসক্ত), অহম্ অপি চ (আমিও) তেষু (তাঁহাদিগের প্রতি) [তথা আসক্তঃ] (সেইরূপ আসক্ত থাকি) ॥২৯॥ আমি সকল জীবের প্রতি সমভাবাপন্ন, সুতরাং আমার কেহ শত্রু নাই অথবা প্রিয়ও নাই । তথাপি যাঁহারা আমাকে ভক্তিসহকারে ভজনা করেন, তাঁহারা আমাতে যেমন সর্ব্বদা আসক্ত থাকেন, আমিও তাঁহাদিগের প্রতি সেইরূপ আসক্ত থাকি ॥২৯॥
চেৎ (যদি) সুদুরাচারঃ অপি (অতি কুৎসিত আচার ব্যক্তিও) অনন্যভাক্ [সন্] (কর্ম্ম-জ্ঞানাদি-গত অন্য ভজন পরিত্যাগ করিয়া) মাম্ (কেবলমাত্র আমাকেই) ভজতে (ভজন করেন), সঃ (তিনি) সাধুঃ এব (সাধু বলিয়াই) মন্তব্যঃ (মান্য হন) হি (যেহেতু) সঃ (তিনি) সম্যক্ ব্যবসিতঃ (উত্তম নিশ্চয় বিশিষ্ট) ॥৩০॥ যদি অত্যন্ত কুৎসিত আচার সম্পন্ন ব্যক্তিও কর্ম্ম-জ্ঞানাদিগত অন্য পূজা পরিত্যাগ পূর্ব্বক একমাত্র পুমর্থবোধে আমাকেই ভজনা করেন, তবে তিনি সাধু বলিয়াই মাননীয় হন, যেহেতু তিনি উত্তম নিশ্চয় করিয়াছেন ॥৩০॥
[সঃ] (মদ্ভজনকারী সেই ব্যক্তি) ক্ষিপ্রং (শীঘ্র) ধর্ম্মাত্মা (সদাচারভূষিত) ভবতি (হন), শশ্বৎ (সর্ব্বদাই) শান্তিং (অনর্থোপশম জনিত সুখ) নিগচ্ছতি (সুষ্ঠুরূপে প্রাপ্ত হন) । [হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীপুত্ত্র !) মে (আমার) ভক্তঃ (ভক্ত) ন প্রণশ্যতি (কখনও বিনষ্ট হয় না) [ইতি] (ইহা) প্রতিজানীহি (প্রতিজ্ঞা কর—ঘোষণা কর) ॥৩১॥ সেই সুদুরাচার ব্যক্তি শ্রীঘ্রই সদাচারভূষিত হইয়া সর্ব্বদা নিত্যা শান্তি লাভ করিয়া থাকেন । হে কৌন্তেয় ! তুমি ঘোষণা করিয়া বল যে আমার ভক্তের কখনও বিনাশ নাই ॥৩১॥
[হে] পার্থ ! (হে অর্জ্জুন !) যে অপি (যাহারা) পাপ যোনয়ঃ (অন্ত্যজাদি যোনিতে উৎপন্ন) স্ত্রিয়ঃ (স্ত্রী) বৈশ্যাঃ (বৈশ্য) তথা শূদ্রাঃ (এবং শূদ্র) স্যুঃ (হইয়াছে) তে অপি (তাহারাও) মাং (আমাকে) ব্যপাশ্রিত্য (বিশেষভাবে আশ্রয় করিয়া) হি (নিশ্চয়ই) পরাং গতিম্ (পরমাগতি) যান্তি (প্রাপ্ত হয়) ॥৩২॥ হে পার্থ ! যাহারা অন্ত্যজাদির বংশে উৎপন্ন, স্ত্রীজাতি, বৈশ্যজাতি বা শূদ্রজাতিতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে, তাহারাও আমাকে সম্যক্রূপে আশ্রয় করিয়া উত্তমগতি লাভ করে ॥৩২॥
পুণ্যাঃ (পবিত্র) ব্রাহ্মণাঃ (ব্রাহ্মণগণ) তথা (এবং) রাজর্ষয়ঃ (ক্ষত্ত্রিয়গণ) ভক্তাঃ [সন্তঃ] (ভক্ত হইয়া) [পরাং গতিং যান্তি] (পরম গতি লাভ করিবেন) কিং পুনঃ (তাহাতে আর কথা কি ?) [অতএব] অনিত্যম্ (অনিত্য) অসুখং (দুঃখপূর্ণ) ইমং (এই) লোকম্ (মনুষ্যদেহ) প্রাপ্য (লাভ করিয়া) মাম্ (আমাকে) ভজস্ব (ভজনা কর) ॥৩৩॥ সুতরাং পবিত্র ব্রাহ্মণগণ বা ক্ষত্ত্রিয়গণ ভক্ত হইয়া যে পরমগতি প্রাপ্ত হইবেন সে সম্বন্ধে আর কথা কি আছে ? অতএব অনিত্য ও দুঃখকর এই মনুষ্যদেহ—বহু যোনি ভ্রমণের পর প্রাপ্ত হইয়া—আমাকেই আরাধনা কর ॥৩৩॥
মন্মনাঃ (মদ্গতচিত্ত) মদ্ভক্তঃ (আমার সেবক) মদ্যাজী [চ] (ও আমার পূজা পরায়ণ) ভব (হও) । মাং (আমাকে) নমস্কুরু (নমষ্কার কর) । এবম্ (এইরূপে) আত্মানং (মন ও দেহ) যুক্ত্বা (আমাতে অর্পণপূর্ব্বক) মৎপরায়ণঃ (আমাকে আশ্রয় করিয়া) মাম্ এব (আমাকেই) এষ্যসি (প্রাপ্ত হইবে) ॥৩৪॥ আমাতে দত্ত-চিত্ত, আমার প্রতি ভক্তিপরায়ণ ও আমার অর্চ্চনে নিরত হও এবং আমাকেই নমস্কার কর । এইরূপে মন ও দেহ আমাতে অর্পণ পূর্ব্বক আমাকে আশ্রয় করিয়া আমাকেই প্রাপ্ত হইবে ॥৩৪॥
ইতি নবম অধ্যায়ের অন্বয় সমাপ্ত ॥ ইতি নবম অধ্যায়ের বঙ্গানুবাদ সমাপ্ত ॥
—···—
|
সূচিপত্র: মঙ্গলাচরণম্ গ্রন্থ-পরিচয় প্রকাশকের নিবেদন ১ সৈন্য-দর্শন ২ সাংখ্যযোগ ৩ কর্ম্মযোগ ৪ জ্ঞানযোগ ৫ কর্ম্মসন্ন্যাসযোগ ৬ ধ্যানযোগ ৭ জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ ৮ তারকব্রহ্মযোগ ৯ রাজগুহ্যযোগ ১০ বিভূতিযোগ ১১ বিশ্বরূপ-দর্শনযোগ ১২ ভক্তিযোগ ১৩ প্রকৃতিপুরুষ-বিবেক-যোগ ১৪ গুণত্রয়-বিভাগ-যোগ ১৫ পুরুষোত্তমযোগ ১৬ দৈবাসুরসম্পদ্-বিভাগ যোগ ১৭ শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ-যোগ ১৮ মোক্ষযোগ গীতামাহাত্ম্যম্ |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
© Sri Chaitanya Saraswat Math, Nabadwip, West Bengal, India. For any enquiries please visit our contact page. |