ঘরে বসি’ সদা কাল কৃষ্ণনাম লঞা ।
যথাযোগ্য-বিষয় ভুঞ্জ, অনাসক্ত হঞা ॥১৯॥
'যথাযোগ্য' এই শব্দ দুটীর মর্ম্মার্থ বুঝে লহ ।
কপটার্থ লঞা যেন দেহারামী না হ ॥২০॥
শুদ্ধভক্তির অনুকূল কর অঙ্গীকার ।
শুদ্ধভক্তির প্রতিকূল কর অস্বীকার ॥২১॥
মর্ম্মার্থ ছাড়িয়া যেবা শব্দ অর্থ করে ।
রসের বশে দেহারামী কপট মার্গ ধরে ॥২২॥
ভাল খায়, ভাল পরে, করে বহু ধনার্জ্জন ।
যোষিৎসঙ্গে রত হঞা ফিরে রাত্রদিন ।
ভাল শয্যা অট্টালিকা খোঁজে অর্ব্বাচীন ॥২৩॥
দেহযাত্রার উপযোগী নিতান্ত প্রয়োজন ।
বিষয় স্বীকার করি’ কর দেহের রক্ষণ ॥২৪॥
সাত্ত্বিক সেবন কর আসব বর্জ্জন ।
সর্ব্বভূতে দয়া করি’ কর উচ্চ সঙ্কীর্ত্তন ॥২৫॥
দেবসেবা ছল করি’ বিষয় নাহি কর ।
বিষয়েতে রাগ-দ্বেষ সদা পরিহর ॥২৬॥
পরহিংসা কপটতা অন্য সনে বৈর ।
কভু নাহি কর ভাই যদি মোর বাক্য ধর ॥২৭॥
নির্জ্জন সুদৃঢ় ভক্তি কর আলোচন ।
কৃষ্ণসেবার সম্বন্ধে দিন করহ যাপন ॥২৮॥
মঠ মন্দির দালান বাড়ীর না কর প্রয়াস ।
অর্থ থাকে কর ভাই যেমন অভিলাষ ॥২৯॥
অর্থ নাই তবে মাত্র সাত্ত্বিক সেবা কর ।
জল-তুলসী দিয়া গিরিধারীকে বক্ষে ধর ॥৩০॥
ভাবেতে কাঁদিয়া বল, 'আমি ত’ তোমার ।
তব পাদপদ্ম চিত্তে রহুক আমার' ॥৩১॥
বৈষ্ণবে আদর কর প্রসাদাদি দিয়া ।
অর্থ নাই দৈন্যবাক্যে তোষ মিনতি করিয়া ॥৩২॥
পরিজন পরিকর কৃষ্ণদাস-দাসী ।
আত্মসম পালনে হইবে মিষ্টভাষী ॥৩৩॥
স্মরণ-কীর্ত্তন-সেবা সর্ব্বভূতে দয়া ।
এই ত’ করিবে যুক্ত বৈরাগী হইয়া ॥৩৪॥
কৃষ্ণ যদি নাহি দেয় পরিজন-পরিকর ।
অথবা দিয়া ত লয় সর্ব্ব সুখের আকর ॥৩৫॥
শোক-মোহ ছাড় ভাই নাম কর নিরন্তর” ।
জগাই বলে, “এভাব গৌরের সনে মোর কোঁদল বিস্তর” ॥৩৬॥
|