শ্রীনবদ্বীপধাম মাহাত্ম্য-মুক্তা-মালা
—: শ্রীনবদ্বীপধাম মাহাত্ম্য :—
দ্বাদশ অধ্যায় : শ্রীশ্রীঋতুদ্বীপ ও শ্রীরাধাকুণ্ড বর্ণন
(শ্রীশ্রীল সচ্চিদানন্দ ভক্তিবিনোদ ঠাকুর রচিত)
জয় শ্রীচৈতন্যচন্দ্র, জয় প্রভু নিত্যানন্দ,
জয়াদ্বৈত জয় গদাধর ।
শ্রীবাসাদি ভক্ত জয়, জয় জগন্নাথালয়,
জয় নবদ্বীপ ধামবর ॥
প্রভাত হইল রাত্র, ভক্তগণ তুলে গাত্র,
শ্রীগৌর নিতাই চাঁদে ডাকে ।
ভক্তসহ নিত্যানন্দ, চলে ভজি পরানন্দ,
চম্পাহট্ট পশ্চাতেতে রাখে ॥
তথা হৈতে বাণীনাথ, চলে নিত্যানন্দ সাথ,
বলে হেন দিন কবে পাব ।
নিতাই চাঁদের সঙ্গে, পরিক্রমা করি রঙ্গে,
মায়াপুর প্রভু গৃহে যাব ॥
দেখিতে দেখিতে তবে, রাতুঃপুর চলে সবে,
দেখি সেই নগরের শোভা ।
প্রভু নিত্যানন্দ বলে, ঋতুদ্বীপে আইল চলে,
এই স্থানে অতি মনোলোভা ॥
বৃক্ষ সব নতশির, পবন বহয়ে ধীর,
কুসুম ফুটেছে চারিভিত ।
ভৃঙ্গের ঝঙ্কার রব, কুসুমের গন্ধাসব,
মাতায় পথিকগণ চিত ॥
বলিতে বলিতে রায়, হৈল পাগলের প্রায়,
বলে শিঙ্গা আন শীঘ্রগতি ।
বৎসগণ যায় দূরে, কানাই নিদ্রিতপুরে,
এখন না আইসে শিশুমতি ॥
কোথায় সুবল দাম, আমি একা বলরাম,
গোচারণে যাইতে না পারি ।
কানাই কানাই বলি, ডাক ছাড়ে মহাবলী,
লাফ মারে হাত দুই চারি ॥
সে ভাব দর্শন করি, ভক্তগণ ত্বরা করি,
নিবেদয় নিতাইয়ের পায় ।
ওহে প্রভু নিত্যানন্দ, ভাই তব গৌরচন্দ্র,
নাহি এবে আছেন হেথায় ॥
সন্ন্যাস করিয়া হরি, গেল নীলাচলোপরি,
আমাদের কাঙ্গাল করিয়া ।
তাহা শুনি নিত্যানন্দ, হইলেন নিরানন্দ,
কাঁদি লোটে ভূমেতে পড়িয়া ॥
কি দুঃখে কানাই ভাই, আমা সবে ছাড়ি যাই,
সন্ন্যাসী হইল নীলাচলে ।
এজীবন না রাখিব, যমুনায় ঝাঁপ দিব,
বলি অচেতন সেই স্থলে ॥
নিত্যানন্দে মহাভাব, করি সবে অনুভাব,
হরিনাম সঙ্কীর্ত্তন করে ।
চারিদণ্ড দিন হৈল, নিত্যানন্দ না উঠিল,
ভক্ত সব গৌর গীত ধরে ॥
গৌরাঙ্গের নাম শুনি, নিতাই উঠে অমনি,
বলে এই রাধাকুণ্ড স্থান ।
হেথা ভক্ত সঙ্গে করি, অপরাহ্নে গৌরহরি,
করিতেন কীর্ত্তন বিধান ॥
হেথা ছয় ঋতু মেলি, গৌরাঙ্গ কীর্ত্তনকেলি,
পুষ্টকৈল শোভা বিস্তারিয়া।
রাধাকুণ্ড ব্রজে যেই, ঋতুদ্বীপ হেথা সেই,
ভক্ত হেথা মজে প্রেম পিয়া ॥
দেখ শ্যামকুণ্ড শোভা, জগজ্জন-মনোলোভা,
সখীগণ কুঞ্জ নানাস্থানে ।
হেথা অপরাহ্নে গোরা, সঙ্কীর্ত্তনে হয়ে ভোরা,
তুষিলেন সবে প্রেমদানে ॥
এস্থান সমান ভাই, ত্রিজগতে নাহি পাই,
ভক্তের ভজন স্থান জান ।
হেথায় বসতি যার, প্রেমধন লাভ তার,
সুশীতল হয় তার প্রাণ ॥
সে দিন সে স্থানে থাকি, শ্রীগৌরাঙ্গ নাম ডাকি,
প্রেমে মগ্ন সর্ব্ব ভক্তগণ ।
ঋতুদ্বীপে সবে বসি, ভজে শ্রীচৈতন্য শশী,
রাত্রদিন করিল যাপন ॥
নাচিতে নাচিতে তবে, নিত্যানন্দ চলে যবে,
শ্রীবিদ্যানগরে উপনীত ।
বিদ্যানগরের শোভা, মুনিজন মনলোভা,
ভক্তগণ দেখি প্রফুল্লিত ॥
নিতাই জাহ্ণবা পদ যে জনার সুসম্পদ,
সে ভক্তিবিনোদ অকিঞ্চন ।
নদীয়া মাহাত্ম্য গায়, ধরি ভক্তজন পায়,
যাচে মাত্র কৃষ্ণভক্তি ধন ॥
|
|
শ্রীনবদ্বীপধাম
মাহাত্ম্য-মুক্তা-মালা
অনন্তশ্রীবিভূষিত ওঁ বিষ্ণুপাদ
পরমহংসকুলচূড়ামণি বিশ্ববরেণ্য জগদ্গুরু
শ্রীশ্রীমদ্ভক্তিনির্ম্মল আচার্য্য মহারাজের
পদ্মমুখের হরিকথামৃত
এইগ্রন্থশিরোমণি শ্রীগুরুপাদপদ্ম ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রীল ভক্তিনির্ম্মল আচার্য্য
মহারাজের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য এবং তাঁর শ্রীচরণের তৃপ্তির জন্য তাঁর অহৈতুক
কৃপায় শ্রীচৈতন্য-সারস্বত মঠ হইতে প্রকাশিত হয় শ্রীমন্ মহাপ্রভুর শুভার্বিভাব
তিথিতে শ্রীগৌরাব্দ ৫৩৪, বঙ্গাব্দ ১৪২৬, খৃষ্টাব্দ মার্চ্চ ২০২০ ।
সূচীপত্র:
শ্রীগৌরধাম ও
শ্রীভক্তিবিনোদ
শ্রীনবদ্বীপধাম মাহাত্ম্য
(১) শ্রীশ্রীনবদ্বীপধামের সাধারণ
মাহাত্ম্য কথন
(২) শ্রীশ্রীগৌড়মণ্ডল ও
শ্রীশ্রীনবদ্বীপধামের বাহ্যস্বরূপ ও পরিমাণ
(৩) শ্রীশ্রীনবদ্বীপধাম
পরিক্রমার সাধারণ বিধি
(৪) শ্রীজীবের আগমন ও শ্রীনিত্যানন্দ
প্রভু তাঁহাকে শ্রীনবদ্বীপতত্ত্ব বলেন
(৫) শ্রীমায়াপুর ও
শ্রীঅন্তর্দ্বীপের কথা
(৬) শ্রীগঙ্গানগর,
শ্রীপৃথুকুণ্ড, শ্রীসীমন্তদ্বীপ, শ্রীবিশ্রামস্থানাদি দর্শন
(৭) শ্রীসুবর্ণবিহার ও
শ্রীদেবপল্লী বর্ণন
(৮) শ্রীহরিহরক্ষেত্র,
শ্রীমহাবারাণসী ও শ্রীশ্রীগোদ্রুমদ্বীপ বর্ণন
(৯) শ্রীমধ্যদ্বীপ ও নৈমিষ
বর্ণন
(১০) শ্রীব্রাহ্মণপুষ্কর,
শ্রীউচ্চহট্টাদি দর্শন ও পরিক্রমা-ক্রম বর্ণন
(১১) শ্রীশ্রীকোলদ্বীপ,
শ্রীসমুদ্রগড়, শ্রীচম্পাহট্ট ও শ্রীজয়দেব-কথা বর্ণনা
(১২) শ্রীশ্রীঋতুদ্বীপ ও শ্রীরাধাকুণ্ড বর্ণন
(১৩) শ্রীবিদ্যানগর ও
শ্রীজহ্ণুদ্বীপ বর্ণন
শ্রীনবদ্বীপধাম মাহাত্ম্য-মুক্তা-মালা
•
শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুরের ভজনকুটির
(স্বানন্দ-সুখদা-কুঞ্জ)
•
শ্রীনৃসিংহপল্লী
•
শ্রীকোলদ্বীপ
|