| |||||||
|
|||||||
শ্রীভক্তিরক্ষক হরিকথামৃত ১০ । সর্ব্বাবস্থায় ভগবানের
এজগতে আমরা প্রত্যেকেই সুখ-দুঃখের সম্মুখীন হই । এই সুখ-দুঃখকে সাধারণ মানুষ একভাবে গ্রহণ করেন, আর যাঁরা অসাধারণ অর্থাৎ প্রকৃত ধর্ম্মতত্ত্বজ্ঞ তাঁরা আর একভাবে গ্রহণ করেন । কিভাবে গ্রহণ করা উচিত সে সম্পর্কে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা ও শ্রীমদ্ভাগবতে বলা আছে । এখন আমরা সেইটা আলোচনা করব ।
দুঃখেষ্বনুদ্বিগ্নমনাঃ সুখেষু বিগতস্পৃহঃ । (গীঃ ২।৫৬) আর শ্রীমদ্ভাগবতে আর একটু এগিয়ে গিয়ে বলেছেন যে সুখ-দুঃখ, ভাল-মন্দ যাই আসুক না কেন সে সব সমান ভাবে মেনে নেওয়া নয়, অথবা কোন রকমে সহ্য করে নেওয়া নয়, ওতেই ভগবানের দয়া দেখতে হবে । তাঁর হাত ছাড়া তো কোন কিছু পাশ করে না, যা কিছু ঘটুক চরমে তাঁর ক্ষমতা আছে, তিনি ইচ্ছে করলে নাও করতে পারেন, কিন্তু তিনি তা করছেন না । যে জিনিষটি আসছে তা আমার কর্ম্মানুসারেই আসছে । আমি আমার পূর্ব্ব কর্ম্মফল ভোগ করছি, এইটুকু জানলে পরে সকলেরই একটা ‘Independent Authority’ (স্বাধীন কর্ত্তৃত্ব) স্বীকার করা হয় ।আর সম্পূর্ণ তাঁর অধীন, তাঁকে যদি বন্ধুর মত দেখতে হয় তাহলে সবকিছু তাঁর হাত দিয়ে Passed (অনুমোদিত) হয়ে আমার কাছে আসছে, সুতরাং নিশ্চয়ই এর মধ্যে আমার মঙ্গল আছে । এটিই বিশুদ্ধ বিচার । শ্রীমদ্ভাগবতে বলেছেন—
তত্তেঽনুকম্পাং সুসমীক্ষমাণো ভুঞ্জান এবাত্মকৃতং বিপাকম্ । (ভাঃ ১০/১৪/৮)
প্রকৃত মুক্তি হচ্ছে ‘স্বরূপেন ব্যবস্থিতি’ Positive Attainment’ কেবল ‘Negative Side’ (নেতিবাচক দিক) থেকে মুক্তি সেটাকে মুক্তি বলছেন না ‘Positive Attainment’ এর (নিত্য, বাস্তব তত্ত্ব) লাইনে তোমার ‘Internal Adoptability’ (অন্তরের গ্রহণক্ষমতা) অনুসারে যেখানে ‘Self Determination’ (স্বরূপোপলব্ধি) চরম জায়গায় গেল, সেখানে পৌঁছালে তবে মুক্তি বলা যাবে । কেবল ‘Negative Side’ (অসৎ মায়িক দিক) থেকে ‘Withdrawal’ (প্রত্যাহার) নয়, ‘Positive Side’ এ সৎ, (বাস্তব তত্ত্বের দিকে) ঠিক তোমার ‘Adjusted Position’ (সামঞ্জস্যময় স্থান) যেটি তোমার স্বরূপে আছে, এইটে হলে পরে তবে তাকে মুক্তি বলে । এখন সেই মুক্তি লক্ষ্য করতে গেলে, সেই মুক্তি পেতে চায় কে ? যে ‘Adjustment in the position, Adjustment of the whole’ (নিজের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য এবং সেই সঙ্গে সবটার সঙ্গে সামঞ্জস্য) তাতে দয়া দেখতে হবে, যাতে বিদ্বেষ নাই, ঔদাসীন্যও নাই, কেবল আমার কর্ম্মের উপর ফেলে দেওয়া নেই, প্রভুর হাত এতে আছে, স্নেহের হাত এতে আছে । আমার ‘Guardian’ (অভিভাবক) এর হাত আছে দেখতে হবে, এটা আমার মঙ্গলের জন্যে । তত্ত্বেঽনুকম্পাং সুসমীক্ষমাণো … সুষ্ঠ সমীক্ষাতে দেখা যাবে এটা তোমার দয়া, ভুঞ্জান এব আত্মকৃতং বিপাকম্ … যদিও এটা আমার পক্ষে খারাপ, আমার পূর্ব্বকর্ম্মের ফল ভোগ করছি—এতেও দয়া শাস্তির মধ্যেও দয়া । মা ছেলেকে মারে—শোধন করবার জন্য, বিদ্বেষবশতঃ নয়, শোধন হোল লক্ষ্য, সুতরাং ছেলে যখন বলবে, মা আরো বেশী করে মার, আমি খুবই অন্যায় করেছি, তখনই মার বন্ধ হয়ে যাবে, কারণ ছেলে বুঝেছে তার কল্যাণের জন্য মেরেছে, সুতরাং তখন মার ‘Stop’ (বন্ধ) হয়ে যাবে ।
|
শ্রীশ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ-প্রণতি PDF ডাউনলোড (26.7 Mb) |
||||||
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥ | |||||||
© Sri Chaitanya Saraswat Math, Nabadwip, West Bengal, India. For any enquiries please visit our contact page. |