দশবিধ নামাপরাধ
শ্রীল ভক্তি সুন্দর গোবিন্দ দেব-গোস্বামী মহারাজ
হরিনাম মহামন্ত্র সর্ব্বমন্ত্রসার ।
যাঁদের করুণাবলে জগতে প্রচার ॥
সেই নামপরায়ণ সাধু, মহাজন ।
তাঁহাদের নিন্দা না করিহ কদাচন ॥১॥
ব্রজেন্দ্রনন্দন কৃষ্ণ সর্ব্বেশ্বরেশ্বর ।
মহেশ্বর আদি তাঁর সেবন-তৎপর ॥
নাম চিন্তামণি কৃষ্ণ-চৈতন্য-স্বরূপ ।
ভেদজ্ঞান না করিবে লীলা-গুণ-রূপ ॥২॥
“গুরু কৃষ্ণ রূপ হন শাস্ত্রের প্রমাণে ।
গুরুরূপে কৃষ্ণ কৃপা করে ভাগ্যবানে” ॥
সে রুগুতে মর্ত্ত্যবুদ্ধি অবজ্ঞাদি ত্যজি ।
ইষ্টলাভ কর, নিরন্তর নাম ভজি ॥৩॥
শ্রুতি, শ্রুতিমাতা-সহ সাত্বত পুরাণ ।
শ্রীনাম-চরণ-পদ্ম করে নীরাজন ॥
সেই শ্রুতিশাস্ত্র যেবা করয়ে নিন্দন
সে অপরাধীর সঙ্গ করিবে বর্জ্জন ॥৪॥
নামের মহিমা সর্ব্বশাস্ত্রেতে বাখানে ।
অতিস্তুতি, হেন কভু না ভাবিহ মনে ॥
অগস্ত্য, অনন্ত, ব্রহ্মা, শিবাদি সতত ।
য়ে নাম-মহিমা-গাথা সংকীর্ত্তন-রত ॥
সে নাম-মহিমা-সিন্ধু কে পাইবে পার ? ।
অতিস্তুতি বলে যেই—সেই দুরাচার ॥৫॥
কৃষ্ণ-নামাবলী নিত্য গোলোকের ধন ।
কল্পিত, প্রাকৃত, ভাবে—অপরাধীজন ॥৬॥
নামে সর্ব্বপাপ-ক্ষয় সর্ব্বশাস্ত্রে কয় ।
সারাদিন পাপ করি সেই ভরসায়—
এমত দুর্ব্বুদ্ধি যার সেই অপরাধী ।
মায়া-প্রবঞ্চিত, দুঃখ ভুঞ্জে নিরবধি ॥৭॥
অতুল্য শ্রীকৃষ্ণনাম পূর্ণরসনিধি ।
তাঁর সম না ভাবিহ শুভকর্ম্ম আদি ॥৮॥
নামে শ্রদ্ধাহীন-জন-বিধাতা-বঞ্চিত ।
তারে নাম দানে অপরাধ সুনিশ্চিত ॥৯॥
শুনিয়াও কৃষ্ণনাম-মাহাত্ম্য অপার ।
যে প্রীতি-রহিত, সেই নরাধম ছার ॥
অহংতা মমতা যার অন্তরে বাহিরে ।
শুদ্ধ কৃষ্ণনাম তার কভু নাহি স্ফুরে ॥১০॥
এই দশ-অপরাধ করিয়া বর্জ্জন ।
যে সুজন করে হরিনাম সংকীর্ত্তন ॥
অপূর্ব্ব শ্রীকৃষ্ণপ্রেম লভ্য তার হয় ।
নাম প্রভু তাঁর হৃদে নিত্য বিলসয় ॥১১॥
|
← গ্রন্থাগারে ফিরে
|