বরজ-বিপিনে যমুনা কুলে ।
মঞ্চ মনোহর শোভিত ফুলে ॥
বনস্পতি লতা, তুষয়ে আঁখি ।
তদুপরি কত ডাকয়ে পাখী ॥
মলয় অনিল, বহয়ে ধীরে ।
অলিকুল মধু-লোভেতে ফিরে ॥
বাসন্তীর রাকা, উডুপ তদা ।
কৌমুদী বিতরে আদরে সদা ॥
এমত সময়ে রসিকবর ।
আরম্ভিল রাস মুরলীধর ॥
শতকোটী-গোপী মাঝেতে হরি ।
রাধাসহ নাচে আনন্দ করি ॥
মাধব-মোহিনী, গাইয়া গীত ।
হরিল সকল, জগত-চিত ॥
স্থাবর-জঙ্গম, মোহিলা সতী ।
হারাওল চন্দ্রাবলীর মতি ॥
মথিয়া বরজ কিশোর মন ।
অন্তরিত হয়, রাধা-তখন ॥
ভকতিবিনোদ পরমাদ গণে ।
রাস ভাঙ্গল আজি রাধা বিহনে ॥
শতকোটি গোপী মাধব মন ।
রাখিতে নারিল করি যতন ॥
বেনুগীতে ডাকে, রাধিকা নাম ।
‘এস এস রাধে !’ ডাকয়ে শ্যাম ॥
ভাঙ্গিয়া শ্রীরাস-মণ্ডল তব ।
রাধা অন্বেষণে চলয়ে যবে ॥
‘দেখা দিয়া রাধে ! রাখহ প্রান !’
বলিয়া কাঁদয়ে, কাননে কান ॥
নির্জ্জন কাননে, রাধারে ধরি’ ।
মিলিয়া পরাণ জুড়ায় হরি ॥
বলে, ‘তুঁহু বিনা, কাহার রাস ?
তুঁহু লাগি’ মোর, বরজ বাস’ ॥
এহেন রাধিকা-চরণ-তলে ।
ভকতিবিনোদ, কাঁদিয়া বলে ॥
‘তুয়া গণ-মাঝে, আমারে গণি’ ।
কিঙ্কোরী করিয়া, রখ আপনি ॥
|