![]() |
|||||||
| |||||||
|
|||||||
শ্রীপুরীধাম মাহাত্ম্য-মুক্তা-মালা মহাপ্রভুর পুরীতে যাত্রা : ভুবনেশ্বর
এই প্রাচীন তীর্থের সম্বন্ধে একটা বিরাট বর্ণনা আছে । বহু কাল আগে পার্বতী তাঁর স্বামীর মুখে শুনেছিলেন যে, জগতে এক স্থান আছে যে কাশির কৈলাসের চাইতে রমণীয় । শুনে তাঁর সেই স্থান দর্শন করতে ইচ্ছা জেগে উঠল । ঐ স্থানটায় পৌঁছে গিয়ে পার্বতী দেখলেন যে, সেই স্থান সত্যই কৈলাসের চাইতে মনোরম । তাই তিনি এখানে ১৫ বছর ধরে গোপীরূপে থাকতেন । এক দিন দুটো অসুর ওই বনে গিয়েছিল । পার্বতীকে দেখে ওরা অবাক হয়ে গেল, “কি সুন্দরী মেয়ে ! তুমি এখানে একা কী করছ ?” পার্বতী ওদেরকে দেখে ভয়ে স্বামীকে প্রার্থনা করতে লাগলেন । মহাদেব শিবজি মহারাজ সেইক্ষণেই ওখানে গোপীরূপে হাজির হয়েছিলেন । বদমাশের কথা শুনে শিবজি মহারাজ পার্বতীদেবীকে বললেন, “ওরা দেবতার থেকে এমন বর পেয়েছিল যে, যার বলে ওদেরকে কোন অস্ত্র দ্বারা মারা যাবে না । ভগবানের ইচ্ছায় তোমাকে নিজে ওদেরকে বধ করতে হবে । চিন্তা কর না, আমি তোমাকে বলে দেব কি করে ওদেরকে বধ করা যায় ।” তখন পার্বতীদেবী অসুরদের কাছে গিয়ে বললেন, “আমি তোমাদের ইচ্ছা পূর্ণ করব, কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে । যে আমাকে কান্ধে বহন করতে পারবে, তারই স্ত্রী আমি হব ।” দুটো অসুর ঝগড়া করতে লাগল (কে ওদের মধ্যে পার্বতীদেবীকে বহন করবে ?), তখন পার্বতীদেবী উভয় অসুরের কান্ধে এক এক পা রেখে দিলেন আর ভীষণ ভারি হয়ে গিয়ে উভয়কে চাপ দিয়ে মেরে ফেললেন । অসুরদের বধ করিয়া পার্বতীদেবী ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়ল । হঠাৎ তাঁর দারুন তৃষ্ণা পেল । শিবজি মহারাজ এসে তাঁর জন্য একটা পুকুর সৃষ্টি করলেন কিন্তু পার্বতীদেবী বললেন, “আমি শুধু নিত্য প্রতিষ্ঠিত জলাশয় থেকে জল খাব !” তখন শিবজি মহারাজ সব তীর্থের জল বিন্দু বিন্দু করে নিয়ে এসেছিলেন আর সেই পুকুরের মধ্যে রাখলেন । সেই জন্য সরোবর নাম হচ্ছে “বিন্দু সরোবর” । সেই সরোবর শিবজি মহারাজ নিজে নির্মাণ করেছিলেন । যখন ব্রহ্মাদি সহ সব দেবতাগণ ওখানে স্নান করেছিলেন, তখন শিবজি মহারাজ ভগবানকে প্রার্থনা করলেন, “হে প্রভু, হে পুরুষোত্তম ! তুমি কৃপা করে অনন্তর বাসুদেবের কাছে এই সরোবরের তীরে বাস করার অনুমতি দাও ।” শিবজি মহারাজের প্রার্থনা শুনে ভগবান অনন্তবাসুদেব নিজ প্রিয় ভক্তের ইচ্ছা পূর্ণ করে তিনি ক্ষেত্রপালকরূপে বিন্দু সরোবরের তীরে বাস করেছিলেন । শিবজি মহারাজও কাশি ছেড়ে দিয়ে তাঁর সঙ্গে ওখানে বাস করতে লাগলেন । আর সেই সময় থেকে প্রথমে ভোগ শ্রীঅনন্তবাসুদেবকে নিবেদন করা যায়, তারপরই সেই প্রসাদ শ্রীশিবজি মহারাজকে নিবেদন করা যায় । সেই শ্রীঅনন্তবাসুদেবের সুপ্রাচীন মন্দির আজও বিরাজমান রয়েছে । এই বিন্দু সরোবরে স্নান করলে পিতৃদেবের আত্মা মুক্তি পেয়ে থাকে । এই বিন্দু সরোবরে স্নান সর্ব্ব তীর্থের স্নানের তুল্য । শ্রীঅনন্তবাসুদেবের দর্শনে অনন্ত ফল হয় । সেই শিবের প্রিয় সরোবরে মহাপ্রভু এসে স্নান করার পর শ্রীভুবনেশ্বর অনন্তবাসুদেবের মন্দিরে এসে তার সামনে নৃত্য কীর্ত্তন করেছিলেন । জয় শ্রীঅনন্তবাসুদেব কি জয় ।
|
অনন্তশ্রীবিভূষিত ওঁ বিষ্ণুপাদ পরমহংসকুলচূড়ামণি বিশ্ববরেণ্য জগদ্গুরু শ্রীশ্রীমদ্ভক্তিনির্ম্মল আচার্য্য মহারাজের পদ্মমুখের হরিকথামৃত
সূচীপত্র
সূচনা : |
||||||
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥ | |||||||
© Sri Chaitanya Saraswat Math, Nabadwip, West Bengal, India. For any enquiries please visit our contact page. |